
বায়েজিদ হোসেন, বগুড়া ব্যুরো।
বগুড়া শেরপুর থানার মামলা নং-৩৭, গত শুক্রবার ২৫ এপ্রিল জিআর নং-১২১/২৫, ধারা-৩২৮/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০। মামলার বাদী মোঃ লাভলু মন্ডল (৪৮), পিতা মৃত ছলি মন্ডল, সাং মহিপুর বারইপাড়া (গাড়িদহ ইউনিয়ন), শেরপুর। সে পেশায় একজন তিন চাকা বিশিস্ট ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক চালক। প্রতিদিনের ন্যায় গত বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক ৪ টায় বাদীর ছেলে মোঃ শামীম (২৫) ইজিবাইক নিয়ে নিজ বাড়ী থেকে বাহির হয়। একই তারিখ রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টায় বাদীর চাচাতো ভাই মোঃ জাহিদুল ইসলাম বাদীকে মোবাইল ফোনে জানান যে, শেরপুর উপজেলার ১নং কুসুম্বী ইউপির ধাওয়াপাড়া গ্রামের ধাওয়াপাড়া-সোনাকানিয়া বাজারের ১০০ মিটার পশ্চিম পার্শ্বে পাকা রাস্তার উপরে বাদীর ছেলে মোঃ শামীম অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। তখন বাদী ও তার পরিবারের লোকজন বর্ণিত স্থানে আসিয়া বাদীর ছেলেকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন ও ইজিবাইকটি চুরি হয়ে গিয়াছে। বাদীর ছেলেকে উদ্ধার করিয়া দ্রুত চিকিৎসার জন্য শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা বাদীর ছেলেকে চেতনা নাশক ঔষুধ খাওয়াইয়া অজ্ঞান করে গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টা থেকে একই তারিখে রাতে ঘটনাস্থল থেকে ইজিবাইকটি চুরি করিয়া নিয়া গিয়াছে। পরবর্তীতে বাদী চুরি যাওয়া ইজি বাইক খোঁজাখুজি করিয়া না শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ রকিব হোসেন মামলাটি তদন্তভার গ্রহন করিয়া মামলাটি তদন্তকালে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমান ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করিয়া প্রথমে ১নং আসামী মোঃ আসাদুল ইসলাম (২৭), পিতা মোঃ সাত্তার মিয়া, সাং ইদলপুর, থানা-মিঠাপুকুর, জেলা-রংপুর ও শাজাহানপুর উপজেলা গোহাইল ইউপির পোয়ালগাছা হাই স্কুলের সামনে থেকে ঘটনা সংক্রান্তে চুরি যাওয়া ইজি বাইকসহ হাতে নাতে আটক করিয়া আসামীর হেফাজতে থাকা ইজিবাইকটি উদ্ধারপূর্বক বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী আসাদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া উক্ত আসামীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামীকে নিয়ে অভিযান পরিচানা করিয়া মামলায় ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ ওয়াহেদুল ইসলাম (২৯), পিতা মৃত হবিবর রহমান, সাং লাঠিগঞ্জ সারোটিয়া উত্তরপাড়া, গাবতলী, মোঃ ফিরোজ উদ্দিন (৩০), পিতা মোঃ জামাল উদ্দিন, বগুড়া শহরের মালতিনগর, ১১নং ওয়ার্ড, জেলা-বগুড়াদ্বয়ের নিকট থেকে চোরাই কাজে ব্যবহৃত ১টি সবুজ পুরাতন সিএনজি, যাহার রেজিঃ নং-বগুড়া-থ-১১-৫৬৯৬ উদ্ধার পূর্বক বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিধি মোতাবেক জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া এবং পর্যাপ্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে জানা যায়, আসামীগনসহ আরো অজ্ঞাতনামা কতিপয় ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজস করিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অটোরিক্সা চুরি করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রয় করিয়া টাকা উপার্জন করা। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করিয়া চোরাই অটোরিক্সা ক্রয়-বিক্রয়ের অপরাধে আসামী মোঃ মিন্টু মেকার (৪০), পিতা মৃত মরজুদ্দিন ফকির, সাং নান্দিয়ারপাড় (পূর্বপাড়া), থানা-ধুনট, জেলা-বগুড়াকে ধুনট উপজেলার সোনাহাটা বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, উপরোক্ত ১ থেকে ৩নং আসামীরা আন্তঃজেলা চোর দলের সক্রিয় সদস্য। তাহারা দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হইতে অটোরিক্সা চুরি করে ৪নং আসামী মোঃ মিন্টু মেকার সহ আরো কতিপয় ব্যক্তিদের নিকটে বিক্রয় করিয়া থাকে। উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত ৪ নং আসামী মোহাম্মদ মিন্টু মেকারকে বিধি মোতাবেক জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া তাহার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, শেরপুর থানার সাধারণ ডাইরী নং-১৩৫৮ তারিখ ২৫-০৪-২৫, মূলে ধুনোট উপজেলার সোনাহাটা বাজারস্থ জনৈক মিন্টু সরকারের গ্যারেজ থেকে অজ্ঞতনামা এলাকা থেকে চোরাইকৃত একটি ইজি বাইক উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়, জিডি মূলে জব্দকৃত ইজিবাইকটির প্রকৃত মালিক সন্ধানের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উক্ত উদ্ধারকৃত ইজিবাইকটি বর্তমানে শেরপুর থানা হেফাজতে রয়েছে, মালিক সনাক্ত করা গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
